নেপালের কাঠমুন্ডুরর ‘ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর’ খুব ছোট আর ছিমছাম বলা যায়। অন অ্যারাইভাল ভিসা নিয়ে ইমিগ্রেশন শেষ করেই এয়ারপোর্টে মোবাইল ফোনের ইন্টারনেট সংযোগ করে করলাম। দিল বাহাদূর ভাইকে ফোন করে বলতে হবে যে আমি চলে এসেছি। ফোনে চেষ্টা করেও পেলাম না। ভাবলাম হয়তো পথে। তারপর আম্মু আর আপুকে নিরাপদে পৌঁছানোর কথা জানিয়ে বাহিরে চলে এলাম।

বাহিরে বেরুতেই হাড় কাঁপানো ঠান্ডা। এই ঠান্ডার সাথে আমি একেবারেই পরিচিত নই। শরীরে তিন স্তরের শীতের পোশাকের উপর স্নো-কাটার পড়ে নিয়েও যেন আমার শীত কমে না। মাথায় পশরের সবুজ রঙের টুপিতেও কান যেন গরম হয় না। এয়ারপোর্টের সাথেই লাগোয়া ক্যাফে থেকে এক কাপ গরম গরম চা নিলাম। Rakura, the finest Himalayan Tea. চা হাতেই ক্যাফের ম্যানেজারের সহায়তায় দিল বাহাদূর দাদাকে ফোনে পাওয়া গেল। আমার ধারণাই সত্য হল, তিনি পথে আছেন৷ আমাকে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় থাকতে বললেন। তিনি সেখান থেকেই আমাকে তুলে নিবেন।

দিল বাহাদূর দাদা মূল একজন ট্যুর এজেন্সীর মালিক। তার নিজস্ব হোটেল থেকে শুরু করে মানি এক্সচেঞ্জ সবই আছে। উনি ছিলেন নেপালে আমার গাইড এবং অভিভাবক। এর আগে আপু যতবার নিউজ কভার করতে নেপাল গিয়েছিল দিল দাদা ছিল আপুরো গাইড। এভাবেই আপুর গাইড থেকে আমার গাইড হয়ে গেলেন আর সাথে অভিভাবকের দ্বায়িত্বটাও।
এদিকে বেশ খানিকটা সময় গেলেও দিল বাহাদূর ভাইয়ের আরকোন খোঁজ নাই। আবার সেই ম্যানেজারের ফোন থেকে ওনাকে ফোন করলাম। এবার তিনি জানালেন ট্রাফিক জ্যামে ছিলেন। তবে আর মাত্র ২০-২৫ মিনিট লাগবে বড়জোড়। আমিও আশা নিয়ে অপেক্ষা করে গেলাম। দেখি নেপালের ২০-২৫ = কতক্ষণ। ভাবতে ভাবতে খানিক হাসলামো।
দিল বাহাদূর দাদা আসলেন। ৩০-৩৫ মিনিট পর। খুব বেশী দেরী হয়নি ভেবে ভালই লাগলো। এন্ট্রির খুব কাছেই তিনি গাড়ি থামিয়ে নামলেন। সাথে তার সহকারী। তবে আমি কিছুটা অবাক হলাম। কারণ তাদের হাতে গাঁদা ফুলের মালা। ভালো ও লাগলো। মনে হতে লাগলো, ট্যুর টা নিশ্চয়ই ভাল যাবে।আমিও আমার স্বভাবসুলভ সেল্ফি তুলে নিলাম। চারিদিকে অন্ধকার হতে শুরু করলো সাথে গাড়িতেও চড়ে বসলাম। উদ্দেশ্য থামেল। কাঠামুন্ডুর বিখ্যাত থামেল।
